খাওয়া দাওয়ার ব্যাপারে যারা একটু সৌখিন তারা যেতে পারেন লাউঞ্জ কমিদা তে। খাবার দাবারের ভিন্নতা ছাড়াও এতে আছে একটি মনোরম পরিবেশ। খাবারের নির্বাচনের ক্ষেত্রে কন্টিনেন্টাল আইটেমের উপর জোর দেয়া হয়েছে রেস্টুরেন্টটিতে। কন্টিনেন্টাল ফুড ছাড়াও এতে আছে নানা ধরনের দেশী বিদেশী আইটেম।
Table of Contents
খাবার-দাবার
লাউঞ্জ কমিদার মেনুটি দেখলেই বোঝা যায় এতে রয়েছে কিছু স্বতন্ত্র গুণাবলী যা অন্য কোন রেস্টুরেন্টের মেনুতে খুব একটা পাওয়া যায় না। দেশী বিদেশী, থাই, চাইনিজ প্রায় সকল ধরনের খাবারই রাখা হয়েছে এখানে। ম্যানেজার শওকত ইসলাম জানান মেন্যুটি তৈরি করেছেন আমেরিকান নাগরিকতাপ্রাপ্ত নাভিদ আহসান যিনি কিনা দীর্ঘদিন যাবত নানা ধরনের রেস্টুরেন্টের সাথে সম্পৃক্ত।
জনপ্রিয় ফুড আইটেম
এই রেস্টুরেন্টে কন্টিনেন্টাল ফুডের মধ্যে যেসকল খাবার খুব বেশি জনপ্রিয় সেগুলোর মধ্যে কয়েকটি হল স্প্যাঘেটিবলগনেস, সি ফুড মেরিয়ানা, লবস্টার র্যাভিউলি, পাস্তা, গ্রীলড রক লবস্টার, মিক্স গ্রীলড প্লেটার। এসবের দাম ও খুব একটা বেশি নয়।
স্প্যাঘেটিবলগনেস এর দাম পড়বে ১১০০ টাকা, সী ফুড মেরিয়ানা ১১০০টাকা, লবস্টার র্যাভিউলি ১৬০০, পাস্তা ১২০০, গ্রীলড রক লবস্টার ২৫০০, মিক্স গ্রীলড প্লেটার২৫০০ টাকা। এছাড়াও এখানে পাবেন এপেটিজার্স হিসেবে আছে পপকর্ণ শ্রিম্প ৬০০ টাকা, ক্র্যাব কেক ৫০০ টাকা, চিকেন কুইসাদিলা ৯০০ টাকা, সুইডিশ মিটবল ৫০০ টাকা, ফ্রাইড ক্যালামেরী ৭৫০ টাকা, কমিদা স্পেশাল হুমুস ৩৫০টাকা, লাইঞ্জ কমিদা স্যাম্পলার ১৮০০ টাকা।
এখানে রয়েছে নানা ধরনের স্যুপ ও। দাম ও আছে নাগালের মধ্যেই। লাউঞ্জ কমিদার জনপ্রিয় কিছু স্যুপ এন্ড সালাদ আইটেম হচ্ছে থিক থাই স্যুপ ২৫০ টাকা, ক্লিয়ার থাই স্যুপ ২৫০ টাকা, থাই ভেজিটেবল স্যুপ ২৫০ টাকা, ক্রিম অফ মাশরুম ৩০০ টাকা, ক্রিম অফ এস্পারাগাস ৩০০ টাকা, ক্ল্যাসিক লাউঞ্জ কমিদা অনিওন স্যুপ ৩৫০ টাকা, ট্রেডিশনাল গ্রীক সালাদ ৪৫০টাকা, মিক্সড সী ফুড সালাদ ৬৫০ টাকা।
স্পেশাল আইটেম
শওকত ইসলাম জানান এইও রেস্টুরেন্টের স্পেশাল আইটেম হচ্ছে বার্গার, স্টেক, এবং স্যান্ডউইচ। বলা হয়ে থাকে যে ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় বার্গার লাউঞ্জ কমিদাতেই পরিবেশন করা হয়। এখানকার ক্লাসিক চিকেন ক্লাব স্যান্ডউইচ এর দাম পড়বে ৪৫০ টাকা, ক্রিমি টুনা সালাদ স্যান্ডউইচ এর দাম ৪৫০ টাকা, ফ্রাইড চিকেন স্যান্ডউইচ ৪৫০ টাকা, ক্ল্যাসিক হাফ এ পাউন্ড স্যারলন বার্গার ৫০০ টাকা, ক্ল্যাসিক ব্যাকন চীজ বার্গার ৬০০ টাকা, চপড ফিশ বার্গার ৫০০ টাকা, গ্রীলড চিকেন বার্গার ৫০০ টাকা। স্টেক ডায়ান ১৩০০ টাকা, নিউ ইয়র্ক স্ট্রিপ স্টেক ১৪০০ টাকা, স্যারলন স্টেক ১৩০০, ফিলেট মিগনোন ১৬০০, টিবোন স্টেক ১৯৫০ টাকা, রিব আই স্টেক ১৩৫০ টাকা, সীজলিং ফাজীতা ১৪০০ টাকা।
ইন্ডিয়ান কুইজিন
লোকাল এবং কিছু ইন্ডিয়ান আইটেম ও পাওয়া যাবে লাউঞ্জ কমিদা তে। ভেজিটেবল কারী উইথ নান,চাপাতি অর স্টীমড রাইস আছে ৪৫০ টাকায়। ট্রেডিশনাল ম,আটন কারী উইথ নান, চাপাতী অর রাইস ৬৫০ টাকা। রুই অর হিলশা দোপেয়াজা উইথ রাইস ৬৫০ টাকা। বীফ অর চিকেন ভুনা লোকাল স্টাইল পাওয়া যাবে ৫৫০ তাকায়। মাটন কোরমা লোকাল স্টাইল উইথ স্টীমড বাটার রাইস আছে ৬৫০ টাকায়।
থাই এন্ড চাইনিজ
লাউঞ্জ কমিদা তে আপনি চাইলে অর্ডার করতে পারেন থাই এবং চাইনিজ খাবার ও। চয়েস অফ বীফ, চিকেন প্রন অর ভেজিটেবল অর কম্বিনেশন থাই ফ্রাইড রাইস এর মূল্য পড়বে ৪৫০ টাকা, চিকেন অর বীফ চিলি অনিয়ন উইথ স্টিমড রাইস ৫০০ টাকা, থাই মিক্সড ভেজিটেবল ৩০০ টাকা, থাই গ্রীলড সুইট ওয়াটার লবস্টার উইথ স্টিমড রাইস ৯০০ টাকা।
লাঞ্চ, ডিনার কিংবা বুফের আলাদা কোন ব্যবস্থা না থাকলেও রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শওকত ইসলাম জানান কেবল মাত্র পার্টি হলেই তারা এখানে লাঞ্চ কিংবা ডিনারের ব্যবস্থা করে থাকেন তবে মিনিমাম ৩০ জনের কোন সমাবেশ হলেও লাঞ্চ কিংবা ডিনারের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এখানে একই সাথে ১৫০-২০০ জনের পার্টি করার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পারিবারিক যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য ব্যাবহার করা যেতে পারে রেস্টুরেন্ট টি। এই রেস্টুরেন্টের আরেকটি বড় দিক হল পার্টির ক্ষেত্রে বাচ্চাদের জন্য সকল খাওয়া দাওয়া ফ্রি।
ডেজার্ট
ডেজার্ট এর মেনুতে আছে নানা ধরনের জুস। লাইম মেরিংগুই পাই, ফ্রাইড এপল ফিরটার্স, চকোলেট এন্ড অরেঞ্জ ক্রিম ক্যারামেল, ব্যানানা স্প্লিট, এপল পাই এলামড ইত্যাদি সহ আরো নানা ধরনের আইটেম।
ড্রিংক্স
সফট ড্রিংক্স, লাচ্ছি, প্লেইন লাচ্ছি, ফ্রুট লাসসি, মিল্ক শেইক, ফ্রুট জুস সহ আছে সুস্বাদু আরো অনেক ড্রিংক্স। তাছাড়া আছে কয়েক রকমের চা। আইসড টি, আইসড কফি, এসর্টেড টি, ব্রিউইড কফি।
আইসড টি এর দাম পড়বে ১৫০ টাকা
গ্রীন টি পাওয়া যাবে ১২০ টাকায়,
রেগুলার টি আছে ১০০ টাকায়, আরো পাবেন পিচ টি-১২০ টাকা, মাসালা টি-১৮০ টাকা, আর্ল গ্রে টি ১৩০ টাকা।
স্বাস্থ্য সচেতনতা
স্বাস্থ্য সচেতনতা সম্পর্কে জানতে চাইলেই ম্যানেজার শওকত ইসলাম গর্ব করে বলেন আমাদের রেস্টুরেন্টে এই পর্যন্ত তিন বার ভ্রাম্যমান আদালতের টিম এসেছে এবং সব কিছু দেখে তারা খুব স্যাটিজফাইড হয়েছেন। কোন প্রকারের অস্বাস্থ্যকর কিছু এই রেস্টুরেন্টে পাওয়া যায়নি।ভ্রাম্যমান আদালতের কর্মকর্তারাও এখন প্রায়ই এখান থেকে খাবার কিনে নিয়ে যান এবং ক্ষেতেও আসেন। খাবারের গুনগত মান এবং পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় আমরা কারো সাথে কখনো আপোষ করিনাই, করবো না।
অভ্যন্তরীণ পরিবেশ
লাউঞ্জ কমিদা তে ঢুকতেই আপনাদের চোখে আগে যা পড়বে তা হচ্ছে রেস্টুরেন্টের ভিতরের পরিবেশ। খুব পরিপাটি করে সাজানো রেস্টুরেন্টটির আবহ তে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে বাংলার লোকশিল্প, ও ঐতিহ্যকে। এতে স্থান পেয়েছে নানা ধরনের গ্রামীণ শিল্পকর্ম, শুধু তাই নয় রেস্টুরেন্টের ভিতরে স্থান পেয়েছে পঞ্চাশ বছরের ও পুরনো একটি বৈঠা সহ নৌকা। রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শওকত বলেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতেই তাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। তাছাড়া রেস্টুরেন্টের দেয়ালে দেয়ালে স্থান পেয়েছে নানা ধরনের গাছের স্থিরচিত্র, যার প্রত্যেকটিই রেস্টুরেন্টের মালিক এর নিজ হাতে তোলা। খুব শৌখিন না হলে এত কিছুর সমাহার একসাথে পাওয়া টা বেশ দুষ্কর ও বটে।
অন্যান্য সুবিধা
রেস্টুরেন্টটিতে আছে ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা। লাউঞ্জ কমিদা তে খেতে আসা সকলেই পাবেন এই সুবিধা। তাছাড়া আন্ডারগ্রাউন্ডে আছে বিশাল পার্কিং সুবিধা, যাতে প্রায় ৩০-৩৫ টা গাড়ি পার্কিং এর সুবিধা আছে।
কোথায় অবস্থিত: গুলশান ২, রোড নং ২২-২৩, হাউজ নং: ২